করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্কে নতুন করে আরও ১১ এবং নিউজার্সিতে দুই বাংলাদেশি মারা গেছেন।
আজ নিউইয়র্ক সময় সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই ১৩ বাংলাদেশির মৃত্যুর সংবাদ গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত আজকাল পত্রিকার সম্পাদক ও জ্যাকশন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি জাকারিয়া মাসুদ।
এ নিয়ে এখন পর্যন্ত নিউইয়র্ক ও নিউজার্সিতে মোট ৫০ বাংলাদেশি মারা গেছেন।
কারা আক্রান্ত হচ্ছেন, মারা যাচ্ছেন?
জাকারিয়া মাসুদ বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে যে সংবাদ আছে তাতে ধারণা করছি, উবার ও ট্যাক্সিচালকদের বড় একটি অংশ আক্রান্ত হয়েছেন। যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে এদের সংখ্যাই বেশি।’
‘উবার বা ট্যাক্সিতে বিভিন্ন দেশের মানুষ উঠেছেন। আমেরিকায় নতুন আসা বিদেশিরা উঠেছেন। আক্রান্ত ইউরোপের দেশগুলোর মানুষও উঠেছেন। এভাবে চালকরা আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন। পরিবারকে আক্রান্ত করে থাকতে পারেন,’ যোগ করেন জাকারিয়া।
জ্যাকসন হাইটস-কেন্দ্রীক সুপার স্টোরগুলো থেকেও হয়ত অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন বলেও মনে করছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ উপসর্গহীন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের কথা জানাল চীন
সাংবাদিক নিহার সিদ্দিকী বলছিলেন, ‘ফোন আসা মানেই যেন মৃত্যুর সংবাদ। পরিচিতজন, কাছের মানুষগুলো মারা যাচ্ছেন। এখন আমরা সংখ্যা গুণছি। গতকাল নতুন করে সাত বাংলাদেশি, আজ ১৩ বাংলাদেশির সংখ্যা জানছি। আগামীকাল কত হবে জানি না!’
নিউইয়র্ক পুলিশের একজন বাংলাদেশি সদস্য জানিয়েছেন, ‘নিউইয়র্কের মানুষ আইন মানেনি, লকডাউনকে গুরুত্ব দেয়নি। আজও আমি ডিউটি করেছি। দেখেছি জরুরি প্রয়োজন নেই তারপরও এমন অনেক বাংলাদেশিকেও রাস্তায় দেখেছি। একজনের কাছে জানতে চাইলাম, কেন বেরিয়েছেন? বললেন, এই এখনই চলে যাব। কিছু হবে না।’
মারা যাওয়া বা আক্রান্তের সংখ্যা বিষয়ে তিনি বলছিলেন, ‘নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। গতকাল জেনেছিলাম ৮ জন, আজ জেনেছি কমপক্ষে ১৪ জন মারা গেছেন। গুঞ্জনে থাকা সংখ্যা আরও অনেক বেশি। হাসপাতালে আছেন অনেক। লাইফ সাপোর্টে আছেন পরিচিত তিন জন।’
একদিন আগে হোয়াইট হাউজ থেকে আশঙ্কা করা হয়েছে যে, করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যের সংখ্য ২ লাখ ৪০ হাজারে পৌঁছাতে পারে।
এ বিষয়ে জাকারিয়া মাসুদ বলেন, ‘একথায় মানুষের ভেতরে আতঙ্ক আরও বেড়েছে। তবে নিউইয়র্কে মানুষকে বাঁচানোর একটা সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। অন্যান্য রাজ্য থেকে প্রায় ৩০০ অ্যাম্বুলেন্স এসেছে নিউইয়র্কে। এসেছেন স্বাস্থ্যকর্মী, ডাক্তার-নার্স।’
‘অনেকগুলো অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘অনেকগুলোর কাজ চলছে। এসব অস্থায়ী হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ২৯ হাজার।’
এছাড়া, ২০টি হোটেলে ১০ হাজার শয্যার হাসপাতাল করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘মোট ৩৯ হাজার শয্যার নতুন হাসপাতাল হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার সকাল পর্যন্ত নিউইয়র্ক সিটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ হাজার ৯১৫ জন এবং মারা গেছেন ১,১৩৯ জন।
প্রকৌশল সহযোগিতায়: মোঃ বেলাল হোসেন
Leave a Reply